ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪

রাশিয়ায় আবারো চালু হচ্ছে আলু রফতানি

আট বছর পর আবারো রাশিয়ায় চালু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশী আলু রফতানি। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ ও রাশিয়ার পক্ষে ন্যাশনাল গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার মিয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এ সমঝোতা স্মারক সই হয়। এ সময় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার এবং বিএডিসির সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের আবহাওয়া ও মাটি আলু উৎপাদনের জন্য খুবই অনুকূল। বর্তমানে বছরে এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হচ্ছে। আমাদের প্রয়োজন বছরে ৮০ লাখ টন, বাকি ২০ লাখ টন রফতানি করার সুযোগ রয়েছে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়ায় দীর্ঘদিন আলু রফতানি বন্ধ ছিল। আমাদের আলু রোগজীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ করেছি, এ নিশ্চয়তা পেয়েই রাশিয়া রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এ বছর খুব বেশি না হলেও আগামী বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টন আলু রফতানি হবে।’

দেশে ২০২০-২১ অর্থবছরে আলু উৎপাদন হয়েছে ৯৯ লাখ টন। রফতানি হয়েছে ৬৮ হাজার ৭৭৩ টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ টন। রফতানি হয়েছে ৭৮ হাজার ৯১০ টন। ২০২২-২৩ সালে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ টন, রফতানি হয়েছে (জানুয়ারি পর্যন্ত) ১৩ হাজার টন।

আলুতে ক্ষতিকর ব্রাউনরট রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় ২০১৫ সালের ৬ মে থেকে আলু রফতানিতে রাশিয়া সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দেশটির নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ ৯১ হাজার টন থেকে ৪০ হাজার টনে নেমে আসে। আলুকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

রাশিয়া ২০২১ সালে ১৮ কোটি টন আলু উৎপাদন করে। বিপরীতে ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ১২৩ কোটি টন। ঘাটতি মেটানোর জন্য রাশিয়া ওই বছর মিসর থেকে ১০ কোটি ২০ লাখ ডলার, আজারবাইজান থেকে ৩ কোটি ৮৪ লাখ ডলার, বেলারুশ থেকে ২ কোটি ৫২ লাখ ডলার, পাকিস্তান থেকে ১ কোটি ৬৫ লাখ ডলার এবং জর্জিয়া থেকে ১ কোটি ৪৩ লাখ ডলার ও অন্যান্য দেশ থেকে ২ কোটি ১৬ লাখ ডলারসহ সর্বমোট ২১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের আলু আমদানি করেছে।

বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে রফতানি উপযোগী আলুর ১০টি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে বিএডিসি। এর মধ্যে বিএডিসি আলু-১ (সানসাইন), সান্তানা, বিএডিসি আলু-৭ (কুইনঅ্যানি), ও বিএডিসি আলু-৮ (লেবেলা) উল্লেখযোগ্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৮২ হাজার টন আলু রফতানি করা হয়েছে। এর মধ্যে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও নেপালে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আলু রফতানি করা হয়।

পাঠকের মতামত: