ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪

ভারতের চাল রফতানি নিষেধাজ্ঞা থাই বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলছে

বর্তমানে বিশ্বে চাল রফতানিতে শীর্ষ দেশ থাইল্যান্ড। দেশটির চালের বাজারে বর্তমানে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ভারত শস্যটির রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় মূলত এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রফতানি বন্ধের ঘোষণার পরই বিশ্ববাজারে আতঙ্কজনিত ক্রয়প্রবণতা (প্যানিক বায়িং) দেখা দেয়। এর সুবিধা নিতে অনেক ব্যবসায়ী কৃত্রিম মজুদ করতে শুরু করেন। ফলে বাজারে আশঙ্কাজনক হারে কমছে সরবরাহের পরিমাণ, যা রফতানি বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। খবর নিক্কেই এশিয়া।

কয়েক সপ্তাহ আগেও থাইল্যান্ডের স্থানীয় মিলগুলোয় ভাঙানো চালের দাম ছিল টনপ্রতি ১৭ হাজার বাথ। কিন্তু গত সপ্তাহে এসব চালের দাম প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার বাথে। এর প্রভাবে রফতানিযোগ্য চালের দামও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। থাই বাজার আদর্শ চালের রফতানি মূল্য বেড়ে টনপ্রতি ৬১০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। বিশ্ববাজারে শস্যটির দাম বেড়ে ১৫ বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।

এখনো চাল রফতানি সীমিত করার কোনো পরিকল্পনা নেই থাইল্যান্ড সরকারের। তবে দেশটির রফতানিকারকরা সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে রফতানিতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন। দাম আরো বাড়ার আশায় অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে রফতানিতে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে।

থাইল্যান্ড প্রতি বছর সাধারণত প্রায় দুই কোটি টন চাল উৎপাদন করে। এর মধ্যে অর্ধেক স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করা হয়। বাকি অর্ধেক রফতানি করা হয়। থাই চাল রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশন জানায়, প্রতি বছরই থাইল্যান্ডে চালের উদ্বৃত্ত থাকে। ফলে সাধারণত সরবরাহে টান পড়ে না। তবে চলতি বছর চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। দামের উত্থান-পতন ও সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে রফতানিকারকরা এখনো প্রাইস কোটেশন দিতে পারছেন না।

ভারত গত ২০ জুলাই চাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে মজুদ কমে যাওয়ার উদ্বেগ দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে আমদানিকারকরা থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামসহ অন্য রফতানিকারক দেশগুলোর প্রতি ঝুঁকছে।

এ বিষেয়ে ব্যাংককভিত্তিক ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃত্রিম মজুদের কারণে থাই চালের দাম আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের অনুপস্থিতি থাইল্যান্ডকে রফতানি বাড়ানোর ব্যাপক সুযোগ করে দিয়েছে। তবে কৃত্রিম মজুদের কারণে দাম অতিরিক্ত বাড়ার আশঙ্কায় রফতানিতে সাবধানতা অবলম্বন করছেন রফতানিকারকরা। কারণ যেকোনো সময় দাম কমে গেলে লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিন বর্তমান অস্থিরতার বাইরে বৈরী আবহাওয়াও চালের বাজারে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এল নিনো পরিস্থিতির কারণে চাল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা, যা চলতি ও আগামী বছর রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

দেশটিতে চাল উৎপাদন নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। তবে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩-২৪ মৌসুমে দেশটিতে চাল উৎপাদন আগের মৌসুমের চেয়ে কমতে পারে। এদিকে সংকুচিত সরবরাহ ও কৃত্রিম মজুদ সত্ত্বেও থাই চাল রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশন এ বছর ৮৫ লাখ টন চাল রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

এনজে

পাঠকের মতামত: