ঢাকা,শনিবার, ২০ জুলাই ২০২৪

জ্বালানি তেল উত্তোলন কমেছে ওপেকের

জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। জুলাইয়ে দেশটি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে। মূলত বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সৌদি আরব ব্যাপক মাত্রায় উত্তোলন কমিয়ে দেয়ার কারণেই ওপেকের উত্তোলনে নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে। খবর আরটি।

জুলাইয়ে জোটটির উত্তোলন দৈনিক নয় লাখ ব্যারেল করে কমেছে। দৈনিক উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৭ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেলে। ২০২০ সালের পর আর কখনো এত বেশি মাত্রায় উত্তোলন কমতে দেখা যায়নি। ওই বছর কভিড-১৯ মহামারীতে সৃষ্ট লকডাউন ও নিম্নমুখী চাহিদার কারণে জোটটি উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

চীনের অর্থনীতিতে টালমাটাল পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে এককভাবে উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি আরব। উদ্দেশ্য পণ্যটির অব্যাহত দরপতন ঠেকানো। এ উদ্দেশ্য পূরণে অনেকটাই সফল হয়েছে সৌদি আরব। জুলাইয়ে দেশটির জ্বালানি তেল উত্তোলন কমে দৈনিক ৯১ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে নেমেছে। এর আগে আগস্ট পর্যন্ত উত্তোলন কমানোর কথা থাকলেও সম্প্রতি সেপ্টেম্বরে ব্যাপক মাত্রায় উত্তোলন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। অন্যদিকে, গত মাসে নাইজেরিয়া ও লিবিয়ার উত্তোলন যথাক্রমে দৈনিক ১ লাখ ৩০ হাজার ও ৫০ হাজার ব্যারেল করে কমেছে। ওপেকের শীর্ষ জ্বালানি তেল ‍উত্তোলক মিত্র দেশ রাশিয়া দৈনিক ৩০ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়েছে, যা সাত মাসের সর্বনিম্ন।

সৌদি আরব জুন থেকেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল করে কমিয়ে আসছিল। আগস্ট পর্যন্ত এ ধারা বজায় রাখার কথা ছিল। তবে গত মাসে দেশটি সেপ্টেম্বরেও উত্তোলন একই হারে কমানোর ঘোষণা দেয়। অন্যদিকে, রাশিয়া আগস্টে দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল করে জ্বালানি তেল রফতানি কমানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা বৈশ্বিক সরবরাহের ১ দশমিক ৫ শতাংশের সমপরিমাণ।

চলতি বছরের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস বাড়িয়েছে রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও আগামী বছরের চাহিদা নিয়ে আশাবাদী জোটটি। কারণ চীন ও ভারত অব্যাহত জ্বালানির ব্যবহার বাড়াচ্ছে।

মাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে ওপেক জানায়, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ২৪ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে বাড়তে পারে। আগামী বছর চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে দৈনিক ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থাও আগামী বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে সংস্থাটির পূর্বাভাসের তুলনায় ওপেক প্লাসের পূর্বাভাস দ্বিগুণ বেশি।

পাঠকের মতামত: