ঢাকা,রোববার, ২১ জুলাই ২০২৪

সিবিওটিতে ১ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে ভুট্টার দাম

রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের মধ্যে শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) গম ও ভুট্টার দাম সোমবার ১ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। কৃষ্ণ সাগর দিয়ে শস্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় দাম বাড়ার ঘটনা ঘটল। অন্যদিকে টানা তিনদিন নিম্নমুখী থাকার পর বেড়েছে সয়াবিনের দামও। খবর রয়টার্স।

সিবিওটিতে গমের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি বুশেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭ ডলার ৬ সেন্টে। ভুট্টার দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে বুশেলপ্রতি ৫ ডলার ৪৪ সেন্টে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া সয়াবিনের দাম দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে বুশেলপ্রতি ১৪ ডলার ১৩ সেন্টে স্পর্শ করেছে।

রাশিয়া টানা চতুর্থ দিনের মতো ইউক্রেনের বন্দরে ‍হামলা চালিয়েছে। গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে খাদ্য রফতানি অবকাঠামোগুলো। এছাড়া ‍কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের শস্যবাহী অনেক জাহাজ অপহরণ করা হচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহকে হুমকির মুখে ফেলতেই রাশিয়া এসব অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।

লম্বা সময় ধরে আলোচনা, সমালোচনা ও গুঞ্জনের পর অবশেষে কৃষ্ণ সাগরীয় খাদ্যশস্য চুক্তি থেকে সরে এসেছে রাশিয়া। ফলে বিশ্বজুড়ে আবারো খাদ্যপণ্য সরবরাহ সংকটের মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে এশিয়ার দেশগুলো। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও এল নিনো আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে এরই মধ্যে দেশগুলোর কৃষি খাত উৎপাদন নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চুক্তি থেকে রাশিয়ার বের হয়ে আসার বিষয়টি খুব দ্রুত নয়, বরং ধীরে ধীরে বাজারে প্রভাব ফেলবে।

দেশটির এ সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বের কোটি কোটি ক্ষুধার্ত মানুষ বিপাকে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘‌বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এরই মধ্যে ক্ষুধায় ধুঁকছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে হিমশিম খাচ্ছে। শস্য চুক্তি নিয়ে রাশিয়ার এ সিদ্ধান্তের কারণে আরো মূল্য দিতে হবে এসব মানুষকে।’

রাশিয়া গত বছরের শুরুর দিকে ইউক্রেনে হামলা চালালে বন্ধ হয়ে পড়ে কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দর দিয়ে শস্য রফতানি। রুশ সেনাদের অবরোধের মুখে ইউক্রেনের রফতানিকারকরা গমসহ সব ধরনের খাদ্যশস্য রফতানি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। ওই সময় দেশটি স্থল ও রেলপথ দিয়ে অল্প কিছু শস্য রফতানি করতে সক্ষম হয়।

টানা ছয় মাস রফতানি বন্ধ থাকায় বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্যের সরবরাহ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে খাদ্যপণ্যের দাম। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো খাদ্যনিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় গত বছরের জুলাইয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এতে ফের কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দর দিয়ে রফতানি চালু হয়।

পাঠকের মতামত: