ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে দ্বিগুণ গ্রাহক, চার গুণ লেনদেন

কভিড-১৯ মহামারীর পর থেকে দেশে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে। গত দুই বছরে এই সেবার গ্রাহক বেড়ে প্রায় দুই গুণ। আর লেনদেন বেড়েছে প্রায় চার গুণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মে মাস শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫৪তে। ২০২০ সালের মে মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহারকারী সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ ২২ হাজার ৩২৭। দুই বছরে নতুন যুক্ত হয়েছে ২৪ লাখ ১৬ হাজার ২২৭ গ্রাহক।

প্রাপ্ত তথ্যে আরও দেখা যায়, গত মে মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহারকারীরা মোট ২০ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা লেনদেন করেন। এর আগের মাস, অর্থাৎ এপ্রিলে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে লেনদেন হয় ২২ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা।

২০২১ সালের মে মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহারাকারীরা লেনদেন করেন ১১ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা। ২০২০ সালের মে মাসে এ খাতের লেনদেন ছিল ৫ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে করোনা মহামারীর পর গত দুই বছরে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বেড়েছে চার গুণ।

২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রথম দেশে করোনা মহামারীর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর দফায় দফায় চলে বিধিনিষেধ। এ সময় পরিবহন বন্ধ বা সীমিত থাকায় অনেকে ব্যাংকে যেতে পারেননি বা সংক্রমণ এড়াতে ব্যাংকে যাননি। কিন্তু প্রয়োজনীয় অনেক লেনদেন সারতে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করতে শুরু করেন।

ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার গ্রাহকরা যেকোনো স্থানে বসে কমপিউটার বা স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে তাদের নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবের লেনদেন করতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন হয় একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড। ব্যাংকের হিসাবধারীরা তাদের নিজ নিজ শাখায় গিয়ে ই-মেইল ঠিকানার মাধ্যমে এই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করেন। ব্যাংক হিসাবে কত টাকা জমা আছে তা জানার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে অন্য গ্রাহকের হিসাবে টাকা স্থানান্তর করা, মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে টাকা পাঠানো, বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধসহ কয়েক ধরনের লেনদেন করা যায়।

জানা যায়, ২০০৪ সালে দেশে প্রথম ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালু করে এবি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক। এরপর একে একে এই সেবা দেওয়া শুরু করে অন্য ব্যাংকগুলোও। বর্তমানে প্রায় ৫০টির মতো ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।

করোনার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল সেবার গ্রাহক দ্রুত বাড়তে শুরু করে বলে জানান ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরানুল হক। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কভিড আসার পর গ্রাহকদের মধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের প্রয়োজনীয়তাটা বেশি করে অনুভব করতে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় এ সেবার গ্রাহক ও লেনদেন বাড়ছে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২০টি ট্রানজেকশনে দৈনিক সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা লেনদেন করতে পারেন।

ব্যক্তিপর্যায়ে দৈনিক সর্বোচ্চ ১০টি ট্রানজেকশনের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে। আর পৃথক লেনদেনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয় প্রতি ১ লাখ টাকা। এর আগে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিপর্যায়ের ব্যবহারকারীদের জন্য কোনো পৃথক লেনদেনের সীমা ছিল না। বাংলাদেশ ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের অধীনে ইন্টারনেট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

পাঠকের মতামত: